এডমন্টনের পাট চুকিয়ে টরোন্টোতে এসেছি তিনমাস হলো। ইউঅফটিতে তখন ঢুকতে চেয়ে পারি নি, আলবার্টাতে যেতে হয়েছিল, সেই দুঃখটা ছিল টরোন্টোর ওপর। চাকরী আর গার্লফ্রেন্ড জুটে যাওয়ায় বাঙালী সমাজের তোয়াক্কা না করে বেলার সাথে এপার্টমেন্টে উঠলাম। বেলা হচ্ছে ইসাবেলা মোরালেস আলবার্টায় আমার সাথেই পড়ত সেখানে থেকেই পরিচয়। ল্যাটিন মেয়েদের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের মেয়েদের অনেক মিল আছে। বেলা পেরুভিয়ান। লাইফে এই একজন মেয়েকে পেলাম যে জেনুইনলী আমার জন্য কেয়ার করে। ও আমার এক সেমিস্টার আগে কাজ পেয়ে এখানে এসেছে। থিসিসের জন্য সামারটা এডমন্টনে রয়ে যেতে হয়েছিল। মিসিসাগা আর ওকভিলের মাঝে এক বেড এক বাথের এপার্টমেন্ট। সকালে উঠে কোন রকমে সিরিয়াল গুজে অফিসে যাই, বেলাকে ড্রপ করে চার ব্লক পরে আমার অফিস, আবার সন্ধ্যায় ওকে পিক আপ করে টিভি দেখতে দেখতে রান্না। দেশের বাইরে এসে এই প্রথম সময়টা একটু এনজয় করতে শুরু করেছি। লিভটুগেদার অর হোয়াটেভার, ইট ফীলস গুড। আই লাভ হার, শী লাভস মী। ঢাকায় জানাইনি, জানানোর প্রয়োজনও দেখছি না। রাতে বেলাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যাই, মাঝে মাঝে যখন টের পাই আমার গায়ে পা তুলে বেলাও আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছে, তখন খুব শান্তি অনুভব করি।
টিভিতে চিলির মাইনারদের রেসকিউ দেখতে দেখতে বেলা বললো, কারমেন ইমেইল করেছে, নেক্সট উইকে আসবে। কারমেন মোরালেস, বেলার বড় বোন, ওর চেয়ে দশ বছরের বড়, মানে পয়ত্রিশের মত বয়স তো হবেই। জানি না ওদের দেশেও বয়স ভাড়ায় কি না, তাহলে আরো বড় হতে পারে। কারমেনের অনেকদিন থেকেই আসার কথা, শেষমেশ আসছে তাহলে। আমি খুব অস্বস্তি বোধ করতে লাগলাম। এত ছোট বাসা, এক্সট্রা একজন লোক এলে কোথায় থাকবে, আর ইন ল মার্কা লোকজন এসব ডীল করতে মন চাচ্ছিল না। মুখে কিছু বললাম না, বেলা মন খারাপ করতে পারে, কয়েক সপ্তাহ চোখ কান বুজে সহ্য করে যেতে হবে।